মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
রাজশাহী নগরীর চন্দ্রিমা থানার এক পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শককে (এএসআই) সোহেল রানাকে মতিহার এলাকার এক মাদক কারবারির স্ত্রীর ঘরে হাতেনাতে আটক করে লাঠিপেটা করেছে এলাকাবাসী।
খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করেছে মতিহার থানা পুলিশ। এর ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিকমাধ্যমে। মঙ্গলবার রাত রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এর আগে রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর মতিহার থানার সাতবাড়িয়া এলাকার এক নারীর ঘরে তাকে আটক করেন স্থানীয়রা। পরে চন্দ্রিমা থানার ওই এএসআই এবং ওই নারীকে ঘরের দরজা বন্ধ করে লাঠিপেটা করে এলাকাবাসী। এএসআই সোহেল রান, তিনি রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) চন্দ্রিমা থানায় কর্মরত। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয়রা ওই নারী এবং এএসআইকে নানা জেরা করছেন।
জেরার ফাঁকে ফাঁকে লাঠি দিয়ে পেটানো হচ্ছে। ওই নারীকে এ সময় বলতে দেখা যায়, ‘প্রচুর মেরেছে, প্রচুর। আর এএসআই সোহেল রানাকে বলতে দেখা যায়, ‘আমি কলমা করে বিয়ে করেছি।
জেরার মুখে তিনি বলেন, তার গ্রামের বাড়ি বগুড়া। সেখানে তার স্ত্রী-সন্তান আছে। এই নারীকে তিনি কলমা করে বিয়ে করেছেন। তবে ঘরে উপস্থিত ওই নারীর স্বামী বলতে থাকেন, স্ত্রীর সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদই হয়নি। ওই নারী বলতে থাকেন, স্বামীকে তিনি মুখে মুখে তালাক দিয়েছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই নারীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভুত সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলেন এএসআই সোহেল রানা। তাকে ঘরে আটকে রেখে থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ আসার অল্পবয়সী কয়েকজন লাঠি দিয়ে এএসআইকে পেটায়।
জানতে চাইলে চন্দ্রিমা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মতিয়ার রহমান বলেন, ঘটনাস্থল মতিহার থানা এলাকা। এএসআই সোহেল রানা মতিহার থানায় আছে। বিস্তারিত পরে বলব। জানতে চাইলে মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল মালেক বলেন, এএসআই সোহেল রানা থানা হেফাজতে আছেন। বিষয়টি ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ ধরনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। এ জন্য কর্তৃপক্ষ এএসআইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন। তবে ওই নারীর সঙ্গে এএসআইয়ের বিয়ে কিংবা বিবাহবহির্ভুত সম্পর্ক চালানোর বিষয়ে ওসি কোনো তথ্য দিতে পারেননি। তিনি জানান, ওই নারীর স্বামী মাদক কারবারি।
তার বাড়ি মতিহার থানার ডাসমারী মধ্যপাড়ায়। তিনি মাদক মামলায় বছর দেড়েক জেলে ছিলেন। এই সময়ে ওই নারী তার বাবার বাড়ি চলে যান। স্বামী জামিনে বের হলেও তিনি তার বাড়ি আসছিলেন না।
ওসি বলেন, ওই নারীর স্বামী যখন জেলে ছিলেন তখন এএসআই সোহেল রানা তিনটি অটোরিকশা কেনেন। অটোরিকশাগুলো এএসআই সোহেল ওই নারীর দায়িত্বে রাখেন।
ওই নারীর ভাই এবং অন্য চালকেরা অটোরিকশাগুলো চালান। সোহেল রানা মাঝে মাঝে ওই নারীর কাছ থেকে ভাড়ার টাকা নিয়ে আসতেন। মঙ্গলবার রাতেও তিনি ভাড়ার টাকা আনতে গিয়েছিলেন। তখন ওই নারীর স্বামী স্থানীয় কিছু ব্যক্তিকে নিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। আসলেই কী ঘটনা ঘটেছে সে ব্যাপারে তদন্ত চলছে বলেও জানান ওসি।